Pages

Monday 21 September 2009

রাখালের কলাম : থলির বিড়াল বাহির হইয়া পড়িতেছে

রাখালের কলাম------------
থলির বিড়াল বাহির হইয়া পড়িতেছে
এতদিনে থলির বিড়াল সব যেন বাহির হইয়া পড়িতেছে। আমাদের সুশীল সমাজ লেখায় প্রবন্ধে, টক শো-তে, সভা-সেমিনারে, সমাবেশে বাংলাদেশকে সঙ্কট হইতে উদ্ধার করিবার মহাপরিকল্পনা তুলিয়া ধরিতে শুরু করিলেন। আদর্শ রাজনীতি, আদর্শ নির্বাচন, আদর্শ সমাজ ও অর্থনীতি কিভাবে গড়িয়া তুলিতে হইবে দেশবাসীকে তাহার সবক দিতে দিতে মুখে ফেনা তুলিলেন। চলমান রাজনীতি ও রাজনীতিবিদদের তুলাধুনা করিয়া নোবেল বিজয়ী ‘নিষ্পাপ’ ব্যক্তিত্বকে সামনে নিয়ে আসিতে থাকিলেন।
রাজনীতিতেও নানা দ্বন্দ্ব-সংঘাত, উত্থান-পতন, সংলাপ-রংলাপ চলিতে থাকিল। আমাদের ডোনাররা বা দান খয়রাতকারীরা, যাহারা সুদে-আসলে দানের অর্থ তুলিয়া লইতে ভুলেন না তাহারাও প্রকাশ্যে উপদেশ নির্দেশ দান করিতে থাকিলেন। টিভি চ্যানেল ও সংবাদপত্র তাহা ফলাও করিয়া প্রকাশ করিতে থাকিল। তাহারা বড় দলগুলি বিশেষত আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জামাত, জাতীয় পার্টির বড় বড় নেতাদের ডাকিয়া খানাপিনা করিয়া কতরকম শলা-পরামর্শ করিলেন, ফমুর্লা হাজির করিলেন। সুশীল সমাজ ধন্য ধন্য করিয়া উঠিলেন। মুরুব্বীরা ঠিক মুরুব্বীর কাজই করিতেছেন। তাহারা দেশের নেতা-নেত্রীদের মধ্যে ঝগড়াঝাটি মিটাইয়া বাংলাদেশে শান্তি ফিরাইয়া আনিতেছেন। সাম্রাজ্যবাদী ‘এককেন্দ্রিক’ মহাশক্তিধর ইচ্ছা করিলেই বাঘ ও ছাগলকে এক ঘাটে জল খাওয়াইতে পারে। কিন্তু উহারা শেষ পর্যন্ত পারিলেন না। অথবা সঙ্কটের মীমাংসা হউক তাহা চাহিলেন না।
অবশেষে ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি জরুরি অবস্থা জারি হইল। আমেরিকান স্টাইলে উহার নামকরণ হইল ১/১১। সেনা সমর্থিত সরকার ফখরুদ্দিন সাহেবের নেতৃত্বে সুশীলসমাজের।
প্রস্তাবনা অনুসারে কিছু ভালো ভালো ঘোষণা দিল। আন্দোলনরত দলগুলি হঠাৎ করিয়াই যেন চুপ মরিয়া গেলেন। তাহাদের কর্মসূচি বাতিল করিলেন। ‘বোকার দল’ কমিউনিস্ট পার্টি জরুরি অবস্থা এবং মৌলিক অধিকার হরণের বিরুদ্ধে মুক্তাঙ্গনে সমাবেশ ও মিছিল করিল। অন্যান্য কিছু বাম দলও প্রতিবাদ করিল। কমিউনিস্ট পার্টির উপর হামলা আসিল। ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতিসহ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হইল। পার্টি নেতাদের গ্রেফতারের জন্য পার্টি অফিস পুলিশ, বিডিআর, র‌্যাব দেড় ঘণ্টার উপর ঘিরিয়া রাখিল।
তার পরের কাহিনী আমরা জানি। সুশীল সমাজের বিরাজনীতিকীকরণের ধারায় রাজনীতির বিরুদ্ধে ঢালাও বিষোদ্গার। যাহা কোনোদিন কল্পনা করা যায় নাই হাসিনা-খালেদাসহ বাঘা বাঘা নেতা-নেত্রীদের গ্রেফতারের হিড়িক লাগিয়া গেল। কোটি কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগে মামলা হইল। দেশ বিদেশের ব্যাংক হইতে শুরু করিয়া বালিশ, লেপ, তোষক, ড্রাম, পুকুর হইতে কোটি কোটি টাকা উদ্ধার হইতে থাকিল। রাস্তা-ঘাটে বস্তা ভরা টাকা, কোটি টাকা মূল্যের গাড়ি পড়িয়া থাকিল। ইয়াজউদ্দিন, ফখরুদ্দিন, মইন উদ্দিন এই তিন