Pages

Monday 21 May 2012

পথে এবার নামো সাথী পথে হবে পথ চেনা

দীর্ঘ দিন ধরেই রাজনৈতিক সঙ্কট চলছে। বস্তুতঃ মুক্তিযুদ্ধের পরই এই সঙ্কট কম বেশি বিদ্যমান। সঙ্কট ক্রমেই তীব্র ও জটিল হচ্ছে। এর প্রধান কারণ হচ্ছে বুর্জোয়া রাজনীতির ব্যর্থতা। ধনিক শ্রেণীর বিশেষত লুটেরা ধনিক শ্রেণীই এই সঙ্কটের জন্য দায়ি। আমাদের মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বে ছিল মধ্যস্তরের জনগণ। শ্রমিক-কৃষক-সাধারণ মানুষ ও ব্যাপক জনগণ এই যুদ্ধে প্রধান ভূমিকা রেখেছে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর মধ্যবিত্তের একাংশ নব্য ধনিকে পরিণত হয়। এদের অধিকাংশ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ব্যবহার করে ঘুষ, দুর্নীতি, লুটপাট, বিদেশি ঋণ সাহায্য লোপাট, চোরাচালান, কালোবাজারি, ফটকাবাজারী ইত্যাদির মাধ্যমে বিপুল অর্থ বিত্তের মালিক হয়। শাসক শ্রেণির মধ্যে এই লুটেরা শ্রেণীরই প্রাধান্য বা নেতৃত্ব। এই লুটেরা শ্রেণী বেপরোয়া অস্থির। গণতন্ত্র, স্থিতিশীলতা বা কোন সিস্টেম এদের ধাতে সয় না। ডাকাতদেরও মধ্যে একটা নিয়ম থাকে , লুটেরারা কোন নিয়ম শৃঙ্খলা মানে না। নিজেদের করা নিয়ম রীতি তারা লঙ্ঘন করে। তোরা যে যা বলিস ভাই আমার সোনার হরিণ চাই’। নিয়ম যাই থাকুক না কেন, আমার টাকা চাই, ক্ষমতা চাই । আইন-বিধান-নিয়ম হবে ক্ষমতা বান্ধব নিজেদের স্বার্থ রক্ষার হাতিয়াড়। ক্ষমতায় থাকা বা যাওয়ার জন্য আইন বিধি যা করার করতে হবে। প্রয়োজনে তত্ত্বাবধায়ক বা অন্তবর্তীকালীন সরকার অথবা জাতীয় সরকার কিম্বা সেনা সমর্থিত সুশীল বা কুশীল সরকার যাই হোক একটা কিছু চাই। কয়েক যুগ ধরেই ধনিক শ্রেণি দেশ পরিচালনায় ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে। কোনোভাবেই তারা দেশ চালাতে পারছে না। মূমুর্ষ ব্যাধিগ্রস্তর মতো একবার চিত হয়ে আরেকবার কাত হয়ে বা উপুড় হয়ে কোনোভাবেই তারা স্বস্তি পায় না। পার্লামেন্টারি ব্যবস্থা, রাষ্ট্রপতি পদ্ধতি, বহুদলীয় ব্যবস্থা , একদলীয় ব্যবস্থা, সামরিক শাসন অথবা সেনাসমর্থিত সরকার এমনি হরেক রকম এক্সপেরিমেন্টের মধ্যদিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। তবুও উপায় নেই গোলাম হোসেন! নিস্তার নেই এই সঙ্কট থেকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও আর্থ-সামাজিক পেক্ষাপটে আজকের যে ধনীক শ্রেণী। তার ললাটে লেখা আছে এমনি সঙ্কট এবং অস্থিরতা। এই সঙ্কট সমাধান করতে তারা অক্ষম ।রাজনীতির হাল যতদিন এই ধনীক শ্রেণীর হাতে থাকবে ততোদিন কম-বেশি এই সঙ্কটের আবর্তেই দেশ ঘুরপাক খেতে থাকবে ।এই সঙ্কটের পাপ চক্র থেকে মুক্তি দিতে পারে শ্রেণীগতভাবে একমাত্র শ্রমিক শ্রেণি ও মেহনতি মানুষ । শ্রমিক-কৃষক-ক্ষেতমজুর,প্রগতিশীল ছাত্র ও যুব সমাজ, র্যাডিক্যাল বুদ্ধিজীবী ছাড়াও, তাদের রাজনৈতিক প্রতিনিধি কমিউনিস্ট ও বামপন্থীরা । ধনীক শ্রেণীর মধ্যে উৎপাদনশীল ও উদ্দ্যোক্তাদের মধ্যে সমাজ অর্থনীতির বিকাশের বর্তমান পর্যায়ে, যে ইতিবাচক প্রবনতা আছে তাতে তাদের কোন অংশ শক্র ,মিত্র বা নিরপেক্ষ থাকবে কি না তা নিয়ে অনেক তর্ক আছে। কিন্তু বামপন্থীরা প্রথমে নিজেরা ঐক্যবদ্ধ হওয়া এই মুহূর্তের সবচেয়ে জরুরি কর্তব্য সে নিয়ে কোন বিতর্ক নেই ।